নির্জন গজারি বনে সবুজে ঘেরা নুহাশ পল্লী। শুধুই বেদনা। শোকের ছায়া। নুহাশের ম্যানেজার, কর্মচারী থেকে শুরু করে থাইল্যান্ড থেকে এনে পালিত কুকুর এরিনার চোখেও। আগত ভক্তবৃন্দের দীর্ঘশ্বাসে নন্দিত এ তারকার নিজের হাতে গড়া দেশীয় জাতের গাছপালার সঙ্গে ফলজ ঔষধি বাগানের গাছপাতা সবই যেন আজ নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। প্রকৃতি প্রেমীর গাছের পাতাও থেমে গেছে, পাতা নড়ছে না। তার বসার চেয়ার আর টেবিলে গাছের অজস্র ঝরা পাতার বেদনা গড়াগড়ি খাচ্ছে। নন্দিত জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ চির শায়িত হতে নুহাশ পল্লীতে আসবেন সে অপেক্ষায় গ্রামের লোকজন।
তার মৃত্যুতে গাজীপুরের পিরুজালী গ্রামের নির্জন গজারি বনে তার হাতে গড়া নুহাশ পল্লী এবং আশপাশের গ্রামগুলোয় শোকের ছায়া বিরাজ করছে। হুমায়ূন আহমেদ অনন্তকাল ধরে যেখানে থাকবেন, সেখানে সকাল থেকেই ছুটে আসছেন শিল্পী, সাহিত্যিক, অভিনেতাসহ নানা শ্রেণী-পেশার ভক্তবৃন্দ। ওই পল্লীর আশপাশের গ্রামের লোকজনও গভীরভাবে শোকাহত, মর্মাহত হয়েছেন তাদের একজন প্রিয় মানুষকে হারিয়ে। গ্রামের মসজিদে মসজিদে শুক্রবার জুমার পর তার আত্মার শান্তির জন্য বিশেষ দোয়া হয়েছে। মুসল্লিদের হাতে বিলানো হয়েছে চিনির বাতাসা। গ্রামের মানুষ বলছেন, দেশ বরেণ্য আলোকিত এ শিল্পী শুধু নিজের জন্য ভাবেননি। ভেবেছেন গ্রামের মানুষের জন্য। তার ছোঁয়ায় অজপাড়া গাঁয়ের গ্রামের মানুষ বিদ্যুৎ পেয়েছেন। রাস্তা পাকা হয়েছে। এ মিষ্টি হুমায়ূন আহমেদের মিলাদের। গ্রামের সন্তান না হলেও নন্দিত তারকা হুমায়ূন আহমেদ সবারই প্রিয় ছিলেন। অনেক ভক্তের এখন অপেক্ষা তার মরদেহের জন্য ।
শুক্রবার ঘুরে দেখা গেছে, লাশ দু’দিন পরে আসার কথা থাকলেও নানা শ্রেণী-পেশার ভক্তরা চোখের কোণে পানি মুছতে মুছতে ঢুকছেন প্রকৃতির সৌন্দর্যে ঘেরা নুহাশ পল্লীতে। এ পল্লীর প্রায় আধা কিলোমিটার সামনেই দেখা গেছে জুমার নামাজ শেষে দলে দলে মসজিদ থেকে হাতে তবারক চিনির বাতাসা (স্থানীয় মিষ্টান্ন) নিয়ে বের হচ্ছেন। সবাই জানালেন, তারা মিলাদ পড়ে, দোয়া করে মিষ্টি নিয়ে বের হয়েছেন। তবারক হাতে নিয়েই স্থানীয় মির্জাপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, ‘ওনার জন্য এলাকা আলোকিত হয়েছে। তার মৃত্যুতে আশপাশের গ্রামের সবাই শেকাহত। গ্রামের বৃদ্ধ হাকিম (৮৫) জানান, তিনি আমাদের গ্রামের লোক কিংবা আত্মীয়স্বজন নন, তবু আমরা তাকে আপনের চেয়ে বেশি কিছু মনে করেছি। অনেক বছর ধরে তিনি এ গ্রামের ওপর দিয়ে আসা-যাওয়া করেন। কোন দিন কারও সঙ্গে কোন কিছু নিয়েই বিরোধ হয়নি। তার বদৌলতে গ্রামের অনেক উন্নয়ন হয়েছে।’ গ্রামের যুবক বিল্লাল খান বলেন, ‘তিনি গ্রামকে আলোকিত করেছেন। বলেছিলেন একটা ক্যান্সার হাসপাতাল করবেন। তাঁর জীবনের আলো নিবে গেছে, আমাদেরও অনেক স্বপ্ন ভেঙে গেছে।’
গেটের পাশেই দেখা গেছে, হতাশ হয়ে বসে আছেন দিনাজপুরের ঘুঘুডাঙ্গা থেকে ৪ জন স্বজনকে নিয়ে নুহাশ পল্লী দেখতে আসা রবিউল ইসলামকে। তিনি জানালেন, আমরা স্যারের ভক্ত। তার পল্লী দেখতে হতাশ হওয়া, আর দুঃখ পাওয়া ছাড়া আর কোন কিছুই বলার নেই। কেননা ঢাকায় এসে জীবনের প্রথমে সকালে স্যারের স্পটে এসে স্যারকে হারানোর খবর পেয়েছি। এর চেয়ে দুর্ভাগ্যের আর কিছু নেই।
ভেতরে ঢুকে দেখা গেল বৃষ্টিবিলাসের সামনে নিশ্চুপ বসে আছেন ডাকসুর সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ইস্তেকবাল হোসেন নওরোজকে। তিনি জানালেন, তাকে হারিয়ে রাতে অনেক কেঁদেছি। সাহিত্য ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে যে ক্ষতি হলো তা পূরণ হওয়ার মতো নয়। অভিনেতা আশরাফ হোসেন টুলু হুমায়ূনের প্রতিচ্ছবির সামনে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি জানালেন এ মহান ব্যক্তির সান্নিধ্যে যেতে পেরে অভিনয়ে জড়াতে পেরেছি। জীবনের অনেক স্মৃতির কথা মনে করে তিনি আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।
লিচু বাগানের পাশেই দেখা গেছে নুহাশের ম্যানেজার বুলবুল হোসেনকে। তার চোখে পানি আর পানি। বললেন, স্যারের ইচ্ছা ছিল পল্লীর ওই লিচু বাগানের পাশে কবর দেয়ার। আর সেখানেই তাকে দাফন করা হবে। স্যার আমেরিকা থেকে ফোন করে সবার আগে খোঁজ নিতেন নুহাশের গাছপালার। যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে স্যারের শেষ কথা ছিল, ম্যানেজার গাছপালা দেখে রেখ, যত্ন নিও। তিনি আরও জানান, সব কর্মচারীকে তিনি নিজের সন্তানের মতোই ভালবাসতেন। প্রায় ১৩ একর জমিতে ধীরে ধীরে গড়ে তোলা নুহাশের সবচেয়ে পুরনো কর্মচারী নুরুল হক। তিনি তার স্যারের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত কিছুই খাননি। হক তার স্যারের সঙ্গে থাকা নানা স্মৃতি মনে করতে করতে বললেন, স্যার সকালে ঘুম থেকেই ডাকতেন, হক চা আনো। সকালে নাস্তার আগেই ৪-৫ কাপ চা খেতেন। শুধু কর্মচারী নয় কর্মচারীদের সন্তানদেরও গভীরভাবে আদর করতেন। দেশ বরেণ্য, তার আশা, তিনি বেঁচে না থাকলেও তার স্বপ্নের এবং শেষ ঠিকানা নুহাশ পল্লী বেঁচে থাকবে অনন্ত কাল।
তার মৃত্যুতে গাজীপুরের পিরুজালী গ্রামের নির্জন গজারি বনে তার হাতে গড়া নুহাশ পল্লী এবং আশপাশের গ্রামগুলোয় শোকের ছায়া বিরাজ করছে। হুমায়ূন আহমেদ অনন্তকাল ধরে যেখানে থাকবেন, সেখানে সকাল থেকেই ছুটে আসছেন শিল্পী, সাহিত্যিক, অভিনেতাসহ নানা শ্রেণী-পেশার ভক্তবৃন্দ। ওই পল্লীর আশপাশের গ্রামের লোকজনও গভীরভাবে শোকাহত, মর্মাহত হয়েছেন তাদের একজন প্রিয় মানুষকে হারিয়ে। গ্রামের মসজিদে মসজিদে শুক্রবার জুমার পর তার আত্মার শান্তির জন্য বিশেষ দোয়া হয়েছে। মুসল্লিদের হাতে বিলানো হয়েছে চিনির বাতাসা। গ্রামের মানুষ বলছেন, দেশ বরেণ্য আলোকিত এ শিল্পী শুধু নিজের জন্য ভাবেননি। ভেবেছেন গ্রামের মানুষের জন্য। তার ছোঁয়ায় অজপাড়া গাঁয়ের গ্রামের মানুষ বিদ্যুৎ পেয়েছেন। রাস্তা পাকা হয়েছে। এ মিষ্টি হুমায়ূন আহমেদের মিলাদের। গ্রামের সন্তান না হলেও নন্দিত তারকা হুমায়ূন আহমেদ সবারই প্রিয় ছিলেন। অনেক ভক্তের এখন অপেক্ষা তার মরদেহের জন্য ।
শুক্রবার ঘুরে দেখা গেছে, লাশ দু’দিন পরে আসার কথা থাকলেও নানা শ্রেণী-পেশার ভক্তরা চোখের কোণে পানি মুছতে মুছতে ঢুকছেন প্রকৃতির সৌন্দর্যে ঘেরা নুহাশ পল্লীতে। এ পল্লীর প্রায় আধা কিলোমিটার সামনেই দেখা গেছে জুমার নামাজ শেষে দলে দলে মসজিদ থেকে হাতে তবারক চিনির বাতাসা (স্থানীয় মিষ্টান্ন) নিয়ে বের হচ্ছেন। সবাই জানালেন, তারা মিলাদ পড়ে, দোয়া করে মিষ্টি নিয়ে বের হয়েছেন। তবারক হাতে নিয়েই স্থানীয় মির্জাপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, ‘ওনার জন্য এলাকা আলোকিত হয়েছে। তার মৃত্যুতে আশপাশের গ্রামের সবাই শেকাহত। গ্রামের বৃদ্ধ হাকিম (৮৫) জানান, তিনি আমাদের গ্রামের লোক কিংবা আত্মীয়স্বজন নন, তবু আমরা তাকে আপনের চেয়ে বেশি কিছু মনে করেছি। অনেক বছর ধরে তিনি এ গ্রামের ওপর দিয়ে আসা-যাওয়া করেন। কোন দিন কারও সঙ্গে কোন কিছু নিয়েই বিরোধ হয়নি। তার বদৌলতে গ্রামের অনেক উন্নয়ন হয়েছে।’ গ্রামের যুবক বিল্লাল খান বলেন, ‘তিনি গ্রামকে আলোকিত করেছেন। বলেছিলেন একটা ক্যান্সার হাসপাতাল করবেন। তাঁর জীবনের আলো নিবে গেছে, আমাদেরও অনেক স্বপ্ন ভেঙে গেছে।’
গেটের পাশেই দেখা গেছে, হতাশ হয়ে বসে আছেন দিনাজপুরের ঘুঘুডাঙ্গা থেকে ৪ জন স্বজনকে নিয়ে নুহাশ পল্লী দেখতে আসা রবিউল ইসলামকে। তিনি জানালেন, আমরা স্যারের ভক্ত। তার পল্লী দেখতে হতাশ হওয়া, আর দুঃখ পাওয়া ছাড়া আর কোন কিছুই বলার নেই। কেননা ঢাকায় এসে জীবনের প্রথমে সকালে স্যারের স্পটে এসে স্যারকে হারানোর খবর পেয়েছি। এর চেয়ে দুর্ভাগ্যের আর কিছু নেই।
ভেতরে ঢুকে দেখা গেল বৃষ্টিবিলাসের সামনে নিশ্চুপ বসে আছেন ডাকসুর সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ইস্তেকবাল হোসেন নওরোজকে। তিনি জানালেন, তাকে হারিয়ে রাতে অনেক কেঁদেছি। সাহিত্য ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে যে ক্ষতি হলো তা পূরণ হওয়ার মতো নয়। অভিনেতা আশরাফ হোসেন টুলু হুমায়ূনের প্রতিচ্ছবির সামনে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি জানালেন এ মহান ব্যক্তির সান্নিধ্যে যেতে পেরে অভিনয়ে জড়াতে পেরেছি। জীবনের অনেক স্মৃতির কথা মনে করে তিনি আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।
লিচু বাগানের পাশেই দেখা গেছে নুহাশের ম্যানেজার বুলবুল হোসেনকে। তার চোখে পানি আর পানি। বললেন, স্যারের ইচ্ছা ছিল পল্লীর ওই লিচু বাগানের পাশে কবর দেয়ার। আর সেখানেই তাকে দাফন করা হবে। স্যার আমেরিকা থেকে ফোন করে সবার আগে খোঁজ নিতেন নুহাশের গাছপালার। যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে স্যারের শেষ কথা ছিল, ম্যানেজার গাছপালা দেখে রেখ, যত্ন নিও। তিনি আরও জানান, সব কর্মচারীকে তিনি নিজের সন্তানের মতোই ভালবাসতেন। প্রায় ১৩ একর জমিতে ধীরে ধীরে গড়ে তোলা নুহাশের সবচেয়ে পুরনো কর্মচারী নুরুল হক। তিনি তার স্যারের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত কিছুই খাননি। হক তার স্যারের সঙ্গে থাকা নানা স্মৃতি মনে করতে করতে বললেন, স্যার সকালে ঘুম থেকেই ডাকতেন, হক চা আনো। সকালে নাস্তার আগেই ৪-৫ কাপ চা খেতেন। শুধু কর্মচারী নয় কর্মচারীদের সন্তানদেরও গভীরভাবে আদর করতেন। দেশ বরেণ্য, তার আশা, তিনি বেঁচে না থাকলেও তার স্বপ্নের এবং শেষ ঠিকানা নুহাশ পল্লী বেঁচে থাকবে অনন্ত কাল।
No comments:
Post a Comment