
মঙ্গলবার ঢাকায় আসা ভারতীয় টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা গতকাল দুপুরেই হোটেল রুম থেকে প্রথম বের হন। দুপুরে রমনা টেনিস কোর্টে অনুশীলন করবেন- এটা সকালেই মনস্থির করেন সানিয়া। এ তথ্য জানিয়েছেন মোহামেডানের লিয়াজোঁ তরিকুল ইসলাম টিটু। বেলা দু’টার পর একই গাড়িতে করে সানিয়া টেনিস কোর্টে পৌঁছান স্বামী শোয়েব মালিককে সঙ্গে নিয়ে। গাড়ি থেকে নেমে সরাসরি কোর্টের দিকে হাঁটতে থাকেন সানিয়া। কোর্টে পৌঁছেই সানিয়া ড্রেস পাল্টে নেমে পড়েন অনুশীলনের জন্য। শর্ট স্কার্ট আর সাদা সিল্কের টি-শার্ট গায়ে সানিয়ার ছবি তুলতে ফটো সাংবাদিকদের মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। দীর্ঘ দেড় যুগ পর সানিয়া এই কোর্টে পা দিলেন। ১৯৯৯ সালে আইটিএফের অনূর্ধ্ব-১৮ টুর্নামেন্ট খেলতে ঢাকায় এসেছিলেন এই টেনিস তারকা। কাল তিন ধাপে সানিয়া দেড় ঘণ্টার বেশি সময় অনুশীলন করেন। সানিয়া যতটা সময় অনুশীলন করলেন স্বামী শোয়েব মালিক এক জায়গাতেই বসে ছিলেন। শুধু স্ত্রী সানিয়া অনুশীলনে বিরতি দিয়ে পানি খেতে এলে বোতল এগিয়ে দেয়াই ছিল একমাত্র কাজ। এমনকি শোয়েব সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাও বলতে রাজি হননি। বাংলাদেশের এক নম্বর টেনিস তারকা অমল রায় কোর্টে টানা সঙ্গ দিলেন সানিয়াকে। অবশ্য অমল রায় ছাড়াও ডেভিস কাপের অধিনায়ক মহিউদ্দিন জিলানি ও শারমিন আলম সারদাও অনুশীলন করেন সানিয়ার সঙ্গে। বিকালের দিকে টেনিসের আন্তর্জাতিক তারকা সানিয়া রমনা টেনিস কোর্টের ভেতরেই উপস্থিত হন কথা বলতে। সানিয়াকে প্রশ্ন করা হয় অস্ট্রেলিয়া ওপেনে বাদ পড়া ও তার ইনজুরি সম্পর্কে। সানিয়া চটপটে জবাবে বলেন, আমি অস্ট্রেলিয়া ওপেন খেলার আগে বাছাই পর্বের তিনটি ম্যাচেই জয়ী হই। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া ওপেনে বাদ পড়ে যাই ইনজুরির কারণে।’ ইনজুরি আপনার ক্যারিয়ারের প্রধান বাধা কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে সানিয়া বলেন, আমি এখনও ইয়াং। আমি বুড়িয়ে যাইনি। আমার এখনও খেলার অনেকটা সময় পড়ে আছে। তাছাড়া আমার ইনজুরির সময় স্বামী, বাবা-মা পরিবারের সবাই আমাকে সাপোর্ট দিয়েছে। আমি এক জগতের খেলোয়াড় আর আমার স্বামী আরেক জগতের। তাতে কোন সমস্যা হয় না।’ বাংলাদেশী টেনিস খেলোয়াড়দের সম্পর্কে সানিয়ার ধারণা জানতে চাইলে সানিয়া বলেন, আজ (গতকাল) যে ছেলেটার সঙ্গে অনুশীলন করলাম তাকে আমি শ্রীলঙ্কার বলে মনে করেছিলাম। শ্রীলঙ্কার একটি ছেলের সঙ্গে আমি অনেক দিন অনুশীলন করেছি। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে, এই ছেলেটির (অমল রায়) ভাল খেলার ক্ষমতা আছে। টেনিসে সবচেয়ে বড় বিষয় ফিটনেস। টেনিস খেলতে হলে ফিটনেস অবশ্যই উঁচু লেভেলে থাকতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে আছে বলেই মনে হলো।’ অনুশীলন শেষে গাড়ির দিকে হেঁটে যাওয়ার পথে স্বামী শোয়েব মালিককে সুযোগ বুঝে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়া হয় ‘সানিয়া কি কাল আপনার খেলা দেখতে বিকেএসপিতে যাবে? শোয়েব জবাবে বলেন, আমি জানি না সানিয়া খেলা দেখবে কিনা।’ সানিয়া আপনার স্ত্রী আর আপনি জানেন না সে কি করবে আর কি করবে না? হেসে দিয়ে শোয়েব পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন। আপনি কাল কি করবেন তা কি জানেন? আমিও জানি না সানিয়া কাল কি করবে। ও কি করবে কি করবে না সেটা ওর বিষয়।’
No comments:
Post a Comment