May 11, 2009

Wajed Mia

অন্তিম শয়ানে ওয়াজেদ মিয়া

লাখো মানুষের শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় সিক্ত হয়ে রংপুরের পীরগঞ্জে নিজ গ্রামে বাব-মা'র কবরের পাশে অনত্দিম শয়ানে শায়িত হয়েছেন বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ড. এম ওয়াজেদ মিয়া। গতকাল রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ, পীরগঞ্জ হাইস্কুল মাঠ ও ফতেহপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে সমাহিত করা হয় ফতেপুরের পারিবারিক কবরস্থানে। প্রতিটি জানাজাতেই হাজারো অশ্রম্নসিক্ত মানুষের ঢল নামে। সৃষ্টি হয় বেদনাবিধুর শোকাবহ পরিবেশ। সর্বসত্দরের মানুষ বিদায় জানান বরেণ্য নিভৃতচারী এ বিজ্ঞানীকে। শোকে সত্দব্ধ হয়ে পড়ে পীরগঞ্জ। আগামী বৃহস্পতিবার বাদ আসর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনে মরহুমের কুলখানি অনুষ্ঠিত হবে। লাশ দাফনের পর গতকাল পৌনে চারটার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে স্বামীর কবর জিয়ারত করেন। তবে মরহুমের পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ফ্লাইট ধরতে না পারায় ও কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল অসুস্থ অবস্থায় দেশের বাইরে থাকায় পিতার লাশ দেখতে পারেননি। গতকাল সকালে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রথম জানাজার পর মরহুমের লাশ বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে তার জন্মস্থান পীরগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে আরেকটি হেলিকপ্টারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা ও চাচাতো ভাই শেখ হেলাল পীরগঞ্জে যান। সাবেক প্রেসিডেন্ট এইচ এম এরশাদ ও জাতীয় পার্টির নেতা রহুল আমীন হাওলাদারও একটি হেলিকপ্টার নিয়ে পীরগঞ্জ যান। পীরগঞ্জ হাই স্কুল মাঠে দুপুরে মরহুমের জানাজার আগে ওয়াজেদ মিয়ার কফিন রাষ্ট্রীয় পতাকা দিয়ে ঢেকে দেয়া হয় এবং তাকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। এরপর ফতেপুর লালদীঘি ফায়ার ব্রিগেড মাঠে নিয়ে যাওয়া হয় ড. ওয়াজেদের লাশ। বিকাল তিনটার দিকে সেখানে তৃতীয় নামাজে জানাজা শেষে চিরশয়ানে শায়িত করা হয় ড. ওয়াজেদ মিয়াকে। শেষ জানাজার আগে ফতেপুর মাঠে মরহুমের ভাগ্নে শামীম, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আমীর হোসেন আমু, মরহুমের বেয়াই প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ বক্তব্য রাখেন।

শোকে স্তব্ধ পীরগঞ্জ

গতকাল রোববার বাদ জোহর রংপুরের পীরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে দ্বিতীয় জানাজা ও তৃতীয়বারের মতো জানাজা শেষে ফতেহপুর পারিবারিক কবরস্থানে তার পিতা আবদুল কাদের মিয়া, মা ময়জান নেছা, বড় ভাই আবদুল জলিল ও আবদুল ওয়াহেদ কানু মিয়ার কবরের পাশে ড. ওয়াজেদের লাশ দাফন করা হয়। রংপুরের কৃতী সনত্দান পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া শনিবার বিকালে মৃতু্যর পর রংপুরে সর্বত্রই শোকের ছায়া নেমে আসে। গতকাল সকাল থেকে তার জন্মস্থান জেলার পীরগঞ্জে নীরব ও শোকের মাতম দেখা দেয়। গোটা এলাকার দোকানপাট, স্কুল-কলেজ, অফিসসহ ব্যাংক-বীমার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। উত্তরাঞ্চলের আওয়ামী লীগের ও বিভিন্ন দলের নেতাকমর্ী শুভাকাঙ্ক্ষী হাজার হাজার মানুষ শেষবারের মতো এক নজর দেখার প্রতীৰায় তার গ্রামের বাড়িতে ভিড় জমান। এক সময় এলাকা লোকারণ্য হয়ে পড়ে। হাজার হাজার মানুষের ঢল, চারপাশে আহাজারি, কান্নার রোল সব মিলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য। প্রিয় মানুষের দেখার প্রতীৰায় থাকা মানুষজনের এক সময় অপেৰার পালা শেষ হয়। হেলিকপ্টারযোগে তার লাশ ঢাকা থেকে পীরগঞ্জে আনা হয়। এ সময় তার স্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, মোশাররফ হোসেন, আমির হোসেন আমু, জাহাঙ্গীর কবীর নানক, আবুল কালাম আজাদসহ মন্ত্রী, এমপি ও দলীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন থেকে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়।

জানাজায় সর্বসত্দরের মানুষের ঢল

বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়াকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গতকাল সকাল থেকেই সর্বসত্দরের মানুষের ঢল নামে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এবং এর আশপাশের এলাকায়। লাখো মানুষ অংশ নেন জানাজায়। প্রেসিডেন্ট, তিন বাহিনীর প্রধানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রধান ও সরকারের বিভিন্ন বিভাগের প্রধানরা শেষ শ্রদ্ধা জানান ড. ওয়াজেদ মিয়াকে। সকাল ১০টা ২২ মিনিটে আলিফ মেডিকেল সার্ভিসের একটি এম্বুলেন্স ওয়াজেদ মিয়ার লাশ নিয়ে স্কয়ার হাসপাতাল থেকে রওনা দেয়। কাজী নজরম্নল ইসলাম এভিনিউ, রমনা, কাকরাইল বিজয়নগর ও দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে ওয়াজেদ মিয়ার মরদেহ পেঁৗছে বায়তুল মোকাররমের পশ্চিম গেটে। এর আগেই বায়তুল মোকাররমের ভেতর ও আশপাশের এলাকা লোকারণ্য হয়ে পড়ে। রাসত্দায় সারি বেঁধে জানাজার জন্য অপেৰা করতে থাকেন হাজার হাজার মানুষ। ১০টা ২৯ মিনিটে জাতীয় মসজিদে যান প্রেসিডেন্ট মো. জিলস্নুর রহমান। জানাজার আগেই মসজিদের মাইকে তেলাওয়াত ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়। সকাল ১০টা ৪৮ মিনিটে শুরম্ন হয় জানাজা। জানাজায় ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন। জানাজায় প্রেসিডেন্ট মো. জিলস্নুর রহমান, ওয়াজেদ মিয়ার বড় ভাই আবদুল খালেক মিয়া, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, জাতীয় সংসদের স্পিকার এডভোকেট আবদুল হামিদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল, মুখপাত্র সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, বিএনপি'র মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, এলডিপি'র সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, বিএনপি'র সহ-সভাপতি এমকে আনোয়ার, তরিকুল ইসলাম, নজরম্নল ইসলাম খান, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ শহিদুল ইসলাম, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান কেএম শফিউলস্নাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আআমস আরেফিন সিদ্দিক, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনী এবং এফবিসিসিআই'র সভাপতি আনিসুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া তিন বাহিনীর প্রধান ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা জানাজায় অংশ নেন। জানাজা শেষে প্রেসিডেন্ট, তিন বাহিনীর প্রধান ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ড. ওয়াজেদ মিয়ার কফিনে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান। এ সময় সরকারের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের পৰেও ড. ওয়াজেদ মিয়াকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। সর্বসত্দরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বায়তুল মোকাররমের দৰিণ পস্নাজায় লাশ রাখা হয় প্রায় ২৫ মিনিটের মতো। ১১টা ১০ মিনিটে লাশ নিয়ে রওনা দেয়া হয় তেজগাঁও পুরাতন বিমান বন্দরের উদ্দেশে। ১১টা ৩০ মিনিটে লাশ নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে। বেলা পৌনে ১২টায় হেলিকপ্টারে করে লাশ নিয়ে রওনা দেয়া হয় রংপুরের পীরগঞ্জের উদ্দেশে। এর আগে সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারযোগে রংপুর যান। ড. ওয়াজেদ মিয়ার লাশের সঙ্গে অন্য একটি হেলিকপ্টারযোগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, মহাসচিব রম্নহুল আমিন হাওলাদার ও সংসদ সদস্য শেখ হেলালসহ আরও ১০ জন রংপুর যান।

দীর্ঘ মোনাজাত: সকাল ১০টায় ড. ওয়াজেদ মিয়ার নামাজে জানাজা হওয়ার কথা থাকায় ১০টার আগেই জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম ও আশপাশের রাসত্দা লোকারণ্য হয়ে পড়ে। জানাজায় অংশ নেয়ার সুবিধার্থে দৈনিক বাংলা ও পল্টন মোড় পর্যনত্দ মাইক লাগিয়ে তেলাওয়াত ও মোনাজাত করে ড. ওয়াজেদ মিয়ার মাগফিরাত কামনা করা হয়। জাতীয় মসজিদের খতিব জানাজার আগেই মুসলিস্নদের নিয়ে দীর্ঘ মোনাজাত করেন।

মানুষের ঢল: সকাল থেকে জানাজায় অংশ নিতে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বায়তুল মোকাররামে লোকজন আসতে থাকেন। জানাজার জন্য মসজিদের দৰিণ পস্নাজার পুরোটা প্রস্তুত ছিল আগে থেকেই। এছাড়া মসজিদের মূল অংশ, বর্ধিত অংশ, উত্তর গেটের রাসত্দা ও পশ্চিমের রাসত্দায় দাঁড়িয়েও হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন। জানাজা শেষে ড. ওয়াজেদ মিয়াকে একনজর দেখতে তার সহকমর্ী ও শুভানুধ্যায়ীরা ভিড় জমান লাশের পাশে। এ সময় এক আবেগময় দৃশ্যের অবতারণা হয়। অনেকে স্মৃতিচারণ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বাবাকে দেখা হলো না জয়ের : বাবা ড. ওয়াজেদ মিয়াকে শেষ দেখা দেখতে পারলেন না পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। গতকাল ভোরে তার দেশে আসার কথা থাকলেও বিমানের সিডিউল ভঙ্গ হওয়ায় তিনি নির্ধারিত সময়ে দেশে ফিরতে পারেননি। সকালে স্কয়ার হাসপাতালে তার যাওয়ার কথা থাকায় সকাল থেকে সেখানে ভিড় করেন ওয়াজেদ মিয়ার আত্মীয়স্বজনরা। সেখানে যান আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকমর্ীরাও। জয় আসার কথা থাকলেও জানাজার আগেই নিশ্চিত হয়ে যায় যে তিনি জানাজায় অংশ নিতে পারছেন না। জয়ের দেশে ফেরার বিষয়ে গতকাল আওয়ামী লীগের মুখপাত্র সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, সোমবার সকালে তিনি দেশে ফিরতে পারেন।

'যমুনা'য় শোকবই: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার মৃতু্যতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে শোকবই খোলা হয়েছে। গতকাল শোকবইতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা স্বাৰর করেন। গতকাল সকাল থেকে 'যমুনা'য় এ শোকবই খোলা হয়। ওদিকে সর্বসাধারণের শোক প্রকাশের জন্য শনিবার রাতেই সুধাসদনেও একটি শোকবই খোলা হয়। এখানে গতকাল বিকাল পর্যনত্দ সর্বসত্দরের সাধারণ ও দলীয় নেতাকমর্ী শোকবইয়ে স্বাৰর করেন।

বৃহস্পতিবার কুলখানি: ড. ওয়াজেদ মিয়ার কুলখানি আগামী বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজার আগে জাতীয় মসজিদের খতিব প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের পৰ থেকে এ কুলখানি অনুষ্ঠানে সংশিস্নষ্টদের অংশ নেয়ার জন্য অনুরোধ করেন।

মনমোহনের ফোন

জারদারি, গিলানি, প্রণবের শোকবার্তা

বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ড. এম ওয়াজেদ মিয়ার মৃতু্যতে সহমর্মিতা জানাতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। তিনি প্রধানমন্ত্রী ও তার শোকসনত্দপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং ড. ওয়াজেদের বিদেহী আত্মার শানত্দি কামনা করেন। এছাড়া আলাদা বার্তায় গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন পাকিসত্দানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি, প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি, তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রেসেপ তাইয়েপ এরডোগান ও ভারতের বিদেশমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি। এদিকে বিদেশী কূটনীতিকদের শোক প্রকাশের জন্য গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন 'যমুনা'য় শোকবই খোলা হয়েছে। ঢাকার ৪২টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও মিশনপ্রধানরা গতকাল এ বইয়ে নিজ দেশের পৰে শোক ও সমবেদনা জানান। এদের মধ্যে ছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি, জার্মান রাষ্ট্রদূত ফ্রাংক মেইকি, ভারতের হাইকমিশনার পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তী, পাকিসত্দানের হাইকমিশনার আলমগীর বাবর, সৌদি রাষ্ট্র্রদূত ড. আবদুলস্নাহ আল নাসের আল বুসাইরি, কানাডার হাইকমিশনার রবার্ট ম্যাকডুভাল ও শ্র্রীলংকার হাইকমিশনার ভেদিবাল কৃষ্ণমূর্তি।

আওয়ামী লীগের ৩ দিনের শোক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম. ওয়াজেদ মিয়ার মৃতু্যতে তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। গতকাল বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন 'যমুনা'য় দলের জরম্নরি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় এ সিদ্ধানত্দ নেয়া হয়। বিকাল সাড়ে চারটায় সংসদে উপনেতা ও দলের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা শুরম্ন হয়। সন্ধ্যা পৌনে ছয়টা পর্যনত্দ এ সভা চলে। সভা চলাকালেই প্রধানমন্ত্রী তার স্বামীর দাফন শেষ করে রংপুরের পীরগঞ্জ থেকে ফিরে আসেন। তিনি বিকাল সাড়ে পাঁচটায় 'যমুনা'য় ফেরেন। সভা শেষে দলের মুখপাত্র সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রীর স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার মৃতু্যতে আওয়ামী লীগ তিন দিনের শোক পালনের সিদ্ধানত্দ নিয়েছে। তিনি বলেন, ১১ই মে থেকে ১৩ই মে এসব কর্মসূচি পালিত হবে। এর মধ্যে আজ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং নেতাকমর্ীরা কালো ব্যাজ ধারণ করবেন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিকালে মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার আয়োজন করা হবে। ১২ই মে সারা দেশে মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় ড. ওয়াজেদে মিয়ার আত্মার শানত্দি কামনা করে প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। ১৩ই মে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিকাল তিনটায় ড. ওয়াজেদ মিয়ার স্মরণে নাগরিক শোকসভার আয়োজন করবে। এছাড়া ১৪ই মে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন 'যমুনা'য় বিকালে পারিবারিকভাবে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে। কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তোফায়েল আহমেদ এমপি, সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল এমপি, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত এমপি, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মুকুল বোস, আবদুল মান্নান এমপি, মাহমুদুর রহমান মান্না, আখতারম্নজ্জামান, আবদুর রহমান এমপি প্রমুখ।

ঢাবিতে মিলাদ মাহফিল

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রয়াত স্বামী বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম ওয়াজেদ মিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে গতকাল মিলাদ মাহফিল ও দোয়া হয়েছে। বাদ আছর এ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আআমস আরেফিন সিদ্দিক, প্রো-ভিসি অধ্যাপক হারম্নন অর রশিদ, কোষাধ্যৰ অধ্যাপক মীজানুর রহমান, কলা অনুষদের ডীন ও শিৰক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক সদরম্নল আমিন, শিৰক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ও যুবলীগের প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক এমরান কবির, প্রক্টর অধ্যাপক কেএম সাইফুল ইসলাম খান, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, সহ-সভাপতি গোলাম সারোয়ার কবির, হাসানুজ্জামান লিটন, আবু আব্বাস ভূঁইয়া, আবদুলস্নাহ আল মামুন, আহসান উলস্নাহ বাশার, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি শেখ সোহেল রানা টিপুসহ কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ছাত্রলীগ এ মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে।

ওদিকে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার মৃতু্যতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন গভীর শোক প্রকাশ করেছে। তারা এ উপলৰে গতকাল দেয়া বিবৃতিতে বলেন, জাতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ সনত্দানের মৃতু্যতে আমরা শোকাহত। তারা মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। যেসব সংগঠন শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে_ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ঢাকা, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শিৰক সমিতি, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি, আ.স.ম আবদুর রব, জাতীয় পার্টি (জেপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদ, বাংলাদেশের বিপস্নবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, ঢাকা চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই), বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ সমিতি, কোর্ট রিপোটর্ার্স এসোসিয়েশন, অগ্রণী ব্যাংক এমপস্নয়িজ ইউনিয়ন, এসএ পরিবহন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ শিৰক কর্মচারী ঐক্যপরিষদ, ইসলামী সমাজ, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ, স্বাধীনতা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পরিষদ, স্বাধীনতা ফোরাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিৰক সমিতি, পিডবিস্নউডি ডিপেস্নামা প্রকৌশলী পরিষদ, বাংলাদেশ ইন্সু্যরেন্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন, সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদ প্রমুখ।

সংসদীয় কমিটির বৈঠক মুলতবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ও বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী এম ওয়াজেদ মিয়ার মৃতু্যতে গতকাল পাঁচটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক মুলতবি করা হয়। সংসদ সচিবালয় জানায়, কমিটিগুলোর মধ্যে রয়েছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বিষয়ক স্থায়ী কমিটি, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় বিষয়ক স্থায়ী কমিটি, ধর্ম মন্ত্রণালয় বিষয়ক স্থায়ী কমিটি, সরকারি অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি ও ভূমি মন্ত্রণালয় বিষয়ক স্থায়ী কমিটি। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই কমিটির বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ করা হবে।

No comments:

Post a Comment

Khoj Khobor