জঙ্গি "বোমা মিজান" ধরা পড়েছে। এখন তার বিচার হবে। এই দেশে দুই ধরণের বিচার হয়। প্রথম বিচার হচ্ছে, দীর্ঘ চুইংগাম বিচার। এটি বছরের পর বছর ধরে চলে। আজ মামলার ডেট পড়ে, কাল জামিন পায়, পরশু সাক্ষী খুঁজে পাওয়া যায় না, লোয়ার কোর্ট, আপার কোর্ট , বিচারপতির ব্রিবতবোধ- ইত্যাদি নানা সার্কাস। বাংলাদেশের শতকরা ৯৯ শতাংশ বিচারই এই ধরণের। দবির একজন নাবালক শিশু, তার বাবা মায়ের ডিভোর্স হয়ে গেছে, এখন সে কার কাছে থাকবে ? বাবার কাছে না মায়ের কাছে ? এই নিয়ে মামলা। মামলা যথা নিয়মে চলছে। আজ ডেট পড়ছে, কাল ডেট পিছাচ্ছে। মামলা চলার এক ফাঁকে দেখা গেল, দবির সাবালক হয়ে নিজেই মায়ের কাছে থাকছে, মায়ের সাথে রাগারাগি হলে কয়েকদিন গিয়ে বাবার সাথে কাটিয়ে আসছে। মামলার চূড়ান্ত সুরাহা ( যাকে বলে আপিল নিষ্পতি) হতে হতে দবিরের ছেলে কবিরের জন্ম হয়ে গেছে। এই হচ্ছে, বাংলাদেশে বিচার ব্যবস্থা। তবে অন্য ধরণের বিচারও আছে, যেটাকে আমি দ্বিতীয় ধরণ বলছি। এটি হচ্ছে সুপারসনিক বিচার ব্যবস্থা। ( এর একটা গালভরা নামও আছে , দ্রুত বিচার আইন ) । এটিতে যা হওয়ার চট করে হয়ে যায়। যিনি বিচার চাইলেন, যিনি আসামী, বাদী, বিবাদী, বিচারক , সাক্ষী এবং আমজনতা কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিচার শেষ। বাংলাভাইদের ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে। কে এই বাংলাভাই, তাকে কে বাংলাভাই বানালো, প্রশাসনের কার কার সহযোগিতায় সে বাংলাভাই হয়ে উঠলো, গোটা ঘটনার রাজনৈতিক এবং আর্থ সামাজিক প্রোপট বুঝে ওঠার আগেই বিচার, রায়, আপিল, নিষ্পতি এবং ফাঁসি। জঙ্গি মিজানের ভাগ্যে- এই দুই বিচারের যেকোন একটি হবে। তার কপাল খুব সুপ্রসন্ন (?) হলে তৃতীয় আরেকটি ঘটনা ঘটে যেতে পারে। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানাতে পারে - কোথায় সে অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছে। র্যাব তাকে নিয়ে অস্ত্র তল্লাশে যেতে পারে, সেখানে আগে থাকতে ওৎ পেতে থাকা মিজানের সহযোগিরা অতর্কিতে র্যাবের উপর গোলাগুলি শুরু করতে পারে - তাতে ক্রস ফায়ারে আর কারও কোন বাল ছেড়া যাবে না- কেবল গুলিবিদ্ধ হয়ে মিজান পড়ে থাকবে রাস্তায়। ঘটনা সেই দিকেই প্রায় মোড় নিচ্ছিল। গতরাতে মিজানকে নিয়ে র্যব বের হয়েছিল তার বাসায় অস্ত্র তল্লাশে। মিজানের বউ বোমা মেরেছে। এই মহিলার সেন্স অব হিউমারের প্রশংসা করতে ইচ্ছে করছে। এই মহিলা র্যাবের বানানো গল্প থেকে কোন আইডিয়া পেল কিনা কে জানে???? আমার অনুরোধ মিজানকে চট করে মেরে ফেলবেন না। বরং , আসুন , আমরা মিজানের গল্পটি শুনি। ছোটবেলায় সে কোন স্কুলে পড়েছ, ধর্মীয় ব্যাখা তাকে কে বুঝিয়েছে, সে কি কেবল বেহেশতের লোভেই এই পথে এসেছে নাকি এর পেছনে ছিল অন্য কোন হতাশা। সে কি মাদ্রায় পড়েছে? তার কাছে কি মনে হয়েছে দেশে ইসলাম কায়েম হলে, সেই হবে হাকিম, তার জানা আরবী লাইনগুলিই হয়ে উঠবে - এই সমাজের শেষ কথা? মিজানের বাবা কি মিজানকে মারতো ? মিজানের মা কি তাকে ঘুম পাড়ানি গান শোনানো ? সেই গান কি তার ভালো লাগতো ? মা যে গান গায়, সেই গান কি কখনো হারাম হতে পারে? মিজানের নিজের মুখ থেকে মিজানের জঙ্গি মিজান হয়ে ওঠার গল্পটি শুনুন। এই গল্প নিয়ে সমাজ বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, ধর্মবিদেরা আলোচনায় বসুন। সমাজের কোথায় কোথায় ফাঁক, যে ফাঁক দিয়ে মিজান, মিজানের স্ত্রীর মতো জঙ্গিদের সৃষ্টি হয়, সেই ফাঁকগুলো বন্ধ করুন। মিজান একটা প্রোডাক্ট। একটা প্রোডাক্ট ধ্বংস করলে, আরেকটি প্রোডাক্ট বাজারে আসতে বেশি সময় লাগবে না। যে সমাজ মিজান বানানোর ফ্যাক্টরি হয়ে উঠছে, সেই সমাজ সংস্কার আগে করুন। এটাই বাংলাদেশকে বাঁচানোর একমাত্র উপায়। Some comments by deshi ampublic: *বাংলাদেশের সবাইও যদি বলে, তাকে মেরে না ফেলে তার গল্প শোনানো হোক, সেটা করা হবে না। তারা নিজেরা রুদ্ধদ্বার কক্ষে হয়তো সেই গল্প শুনতেও পারে, কিন্তু গল্পটা গুম হয়ে যাবে আমাদের দৃষ্টি থেকে। কারণটা সোজা- গল্পের কুৎসিত পাত্রপাত্রীগুলো তো গল্পের প্রাথমিক শ্রোতারাই। হা হা হা। *বাংলা ভাই, শায়েখ আব্দুর রহমান এবং এ রকম আরো অনেক....লিস্টিটি টা জানার ও দেখার বাইরে অনেক অনেক বড় হয়তবা। তবে এইসব জঙ্গী কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা না। মোটা চোখে এরা বড় মাপের অপরাধী, মহাপাপী; কেন না তারা ইসলামের নামে বোমা হালমা করে, নিরপরাধ মানুষ হত্যা করে। কিন্তু খুব সূক্ষ চোখে এরা জন্মেই জঙ্গী হয়নি, এদের কে কেউ এই মানুষ রূপী যন্ত্র বানিয়েছে। এই জঙ্গীরা কিন্তু আমাদের সমাজেরই মানুষ, এদের পরিবারও আমাদের আর দশটা বাংলাদেশী পরিবারের মত। তাই এদের ভেতরে যে পশুটি জেগে উঠেছে, ঠিক সেই পশুটি কিন্তু আমাদের মাঝে ঘুমিয়ে আছে। তার সাথে আমাদের পার্থক্য এতটুকুই সে কোন কারণে ঘুমন্ত পশুটিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি; আমরা আপাততঃ পেরেছি। অনেক প্রশ্নই আসে মনে-কেন এরা অনেকের চেয়ে আলাদা? কারা এই পর্দার অন্তরালের মানুষ যারা জঙ্গী পয়দা করছে? সে কি তার বোউ এর গর্ভে এই বহুরূপী পয়দা করছে, না তার কন্যার গর্ভে পয়দা করছে? এই পয়দাতে কি শান্তি বা কি লাভ? ব্যাবসায়িক প্রেক্ষাপটে এটা কতখানি লোভনীয়? এর সাথে আর্ন্তজাতিক যোগাযোগ কতটুকু এবং থাকলে তারা কারা এবং দেশের কাদের সাথে তাদের যোগাযোগ কিংবা আত্মীয়তা? এরকম হাজারো প্রশ্নের অন্তরালে হারিয়ে যাওয়া যাবে কিন্তু তাতে এই সমস্যার সহসা কোন সমাধান মিলবেনা। কেন না আমাদের মধ্যেই একটি শ্রেণীর নিকট এই সমস্যা জমজমাট ব্যবসা। তারা চায় এই সমস্যা টিকে থাক যুগ যুগ সময়। সেই শ্রেণীকে যদি আমরা কোন দিন বর্জন করতে পারি, তবেই পারব এই মহামারী জঙ্গী রোগের বিস্তার রোধ করতে.... *...........বলেছেন: দেশে জংগী আসলো কোথা থেকে ?? যত্তসব ভুয়া নিউজ । দেশে জংগী যা ছিল সবতো ম্যা...... ধরে ফেলেছেন । কেন বিশ্বাস হচ্ছে না ? ম্যা..... নিজে বলেছেন, আপনি তবূ বিশ্বাস করছেন না ? আপনি মোটেও ভাল লোক না * বোমা মিজান বা বোমারু মিজান একটা রাজনৈতিক নাটক। ওকে ধরা হয়েছে রাজনৈতিক স্ক্রীপ্ট অনুযায়ী। শ্যাওড়াপাড়া বা কাজীপাড়ার কোনবাড়িতে ও আছে সেই তথ্যের ভিত্তিতে যে সব গু-য়েন্দা নামক নট-নটীরা পাকড়াও নাটক মঞ্চস্থ করেছে তাদের জিজ্ঞাসা করা উচিৎ। তাদের কর্মকান্ড নিয়ে লেখা উচিৎ। কোন তথ্যের ভিত্তিতে গুয়েন্দাবাহিনী ও নট-নটী বাহিনী সেখানে গেল সেটা ঘেটে দেখা উচিৎ! বোমারু মিজান নামটা কে দিল? এটা কি স্ক্রীপ্টের চরিত্র? বাংলাভাই, শায়ক কতো ভাইকে ধরা হলো, মারা হলো। সেই উদীচি থেকে এখন পর্যন্ত স্ক্রীপ্ট লেখা আর জাতির স্বার্থে বলিখেলা শেষ হলো না। জাতির নানী, খালাম্মা ও আপা (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নন) সাহারা খাতুন প্রয়াত ড: ওয়াজেদ মিয়ার কোনো শোকসভায় সাংবাদিকদের বললেন ( আমি বুঝলাম না, শোকসভায় কেন এ প্রসঙ্গ এলো! যেন ড. ওয়াজেদ মিয়া জঙ্গী আক্রমণে মারা গেছেন!), "আগের সরকার বোমাবাজি ও জঙ্গীবাদের উত্থানের জন্য দায়ী!!" *খালি প্রোডাক্ট ধরা পড়ে। কারখানার মালিক ধরা পড়ে না - সমস্যাটা এখানেও। সমাজ নামের বা একটি সিস্টেম নামের জঙ্গী নামের কারখানা ধ্বংস করার আগেও কারখানার মালিকের গল্টা শোনা জরুরী। সে কেন এই কারখানা দিয়া বসল ? এত টাকা কেন বিনিয়োগ করল ? এইটা কি কেবল ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্যই, নাকি ইসলাম প্রতিষ্ঠার নাম দিয়া অন্য কোন উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায় ? *"আমরা মিজানদের তৈরী করবো। অবাধ্য হলে গ্রেফতার করবো। আইনের প্যাঁচ থাকলে বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘ করবো। না থাকলে দ্রুত বিচারে ফাঁসি দিয়ে আপদ বিদায় করবো। নিয়ন্ত্রনহীন হলে ক্রসফায়ারে মারব। একসময় সব ভূলে যাব। নতুন মিজান তৈরী করব। অবাধ্য হলে ............ ......... ... ............. ......... ......... ......... ... ............ ......... ......... ......... ... ............ ......... ......... ... ............ ......... ......... ......... ...... ............ ......... ......... ...... ............ ......... ......... ....." *জঙ্গি কেন তৈরী হয়- এ সম্পর্কে আমাদের একটা ভাসা ভাসা ধারণা আছে। আর বাঙালি জাতি ভাসা জ্ঞানকে গভীর জ্ঞান ভাবে। গোটা দেশ চলছে- ভাসা ভাসা তথ্যের উপর। কে জঙ্গিদের অর্থদাতা?এদের অস্ত্র কোথা থেকে আসে? এদের আশ্রয়দাতা কারা? আগে এদের কারা আশ্রয় দিতো, এখন কারা আশ্রয় দেয়? এদের কোন রাজনৈতিক সমর্থক আছে কিনা? এদের রাজনৈতিক পটভূমি কি? * আমাগো দেশের কোনো হজমা বুদ্ধিজীবি এত সুন্দর করে বলে নাই। আপনি দারুন বলেছেন। আসলেই এ একটা প্রোডাক্ট। একে মেরে ফেললে আরেকটা জন্মাবেই। কিন্তু এইপ্রোডাক্টগুলো এলো কিভাবে এটা কিন্তু আমরা কমবেশী সবাই জানি, কারা করছে তাদের সম্পর্কে আমরা মোটামুটি একটা ধারনা পেয়েছি। কিন্তু এই সমস্যাগুলোর সমাধান কিন্তু আমরা করতে পারছি না শুধু এ কারনেই যে সমস্যা না থাকলে নেতাদের রাজনীতি ব্যাবসা মার খেয়ে যাবে!তাহলে বুঝতেই পারছেন কোনো সরকারই এটা সারাতে চাইবে না, পারবেও না নিজেদের দুস্ট দালালদের কারনে *তবে দু:খের সাথে অনুমিত হচ্ছে যে মিজানের গল্পটা আর আমাদের শোনা হবে না। মিজানের গলায় জঙ্গি খেতাব যারা ঠুকে দেয় তারা তাদের জায়গায় যাতে ঠিক থাকে, তারা যেন ঠিক মতো আরো দুইবার উমরা হজ্জ করতে পারে, হাজি টাইটেল নিয়ে আরো দুইবার এমপিতে দাড়াতে পারে, অমুক পার্টির তমুক হতে পারে সেই ধারাবাহিকতা ঠিক থাকবে যদি মিজানের গল্প আমরা না জানি। * মিজান কেন জঙ্গি হয়ে উঠলো, তার চাইতেও বোধহয় বেশি গুরুত্বপূর্ণ- মিজানদের জঙ্গী বানানোর কারখানার প্রোপাইটর কারা। *"মিজান একটা প্রোডাক্ট। একটা প্রোডাক্ট ধ্বংস করলে, আরেকটি প্রোডাক্ট বাজারে আসতে বেশি সময় লাগবে না। যে সমাজ মিজান বানানোর ফ্যাক্টরি হয়ে উঠছে, সেই সমাজ সংস্কার আগে করুন। " *প্রস্তাবটা ভালই। কিন্তু কে করবে এইসব। বুদ্বিজিবীরা সুশীল। রাজনৈতিক নেতারা আছে ওদের ধান্ধায়।মিডিয়া আছে এই দু গ্রুফের কথা নিয়ে রাত দিন জাবর কাটা। হবেনা মনে হয়। হ্যাঁ, এই বুদ্ধিজীবীরা একটা সমস্যা বটে .. |
May 31, 2009
Please Read, interesting perspective, জঙ্গি মিজানকে না মেরে গল্পটা শুনুন, কাজে আসবে .....................
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment