April 21, 2009

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন সেনাপ্রধান

ফুটবলের জন্য বড় অঙ্কের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন উ আহমেদ। গতকাল সকাল ১১টায় তিনি ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকারের কাছে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র পাঠান। ১২ই এপ্রিল ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে বসুন্ধরা গ্রুপের একটি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধানের উপস্থিতি নিয়ে সমপ্রতি সমালোচনার ঝড় ওঠে। ওই অনুষ্ঠানে বাফুফের আমন্ত্রণে প্রধান অতিথি ছিলেন সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ। অনেকেই মনে করছেন, এরই প্রতিক্রিয়া হিসেবে এএনসি চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন সেনাপ্রধান। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাফুফেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকা মূল্যের দু'টি খেলার মাঠ উপহার দেয়ার ঘোষণা দেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। ওয়ান ইলেভেনের পর এটাই ছিল দেশে তার প্রকাশ্য উপস্থিতি। গত রোববার বাফুফের পক্ষ থেকে এ নিয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরা হয় সংবাদ মাধ্যমের সামনে। ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে সেনাপ্রধানের বিভিন্ন অবদানের কথা তুলে ধরে বলা হয়, তাদের আমন্ত্রণেই মইন উ আহমেদ সারা দেশের ফুটবলের উন্নয়নের স্বার্থে ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তিনি জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে মাঠ এবং ডিএএফ-এর জন্য অফিস বরাদ্দের ঘোষণা দেন। তবে কিছু মহল ওই ঘটনাটি ভালভাবে নিতে পারেনি। এদিকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চেয়ারম্যানের পিএস সেরনিয়াবাত জানান, 'জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সেনা প্রধানের পদত্যাগের খবরটি সত্যি। তবে কখন তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন মন্ত্রণালয়ে তা আমরা বলতে পারবো না। মূলত ব্যক্তিগত কারণে খুব বেশি সময় দিতে পারছেন না বলেই তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন বলে আমরা শুনেছি।' সেনাপ্রধান সরে দাঁড়ানোয় চেয়ারম্যান পদে সংবিধান অনুযায়ী আসীন হবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার। আবার তার পদত্যাগের সিদ্ধান্তের পেছনে অনেকে সরকারের হস্তক্ষেপ রয়েছে বলেও মনে করে। ক্রীড়াঙ্গনের সর্বোচ্চ সংস্থার প্রধান হিসেবে অতীতে ক্রীড়া মন্ত্রীকেই দেখা গেছে। বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই আলোচনা ছিল কবে এনএসসি'র শীর্ষপদে রদবদল হবে সে বিষয়টি।


২০০৭ সালের ৮ই জুলাই ফখরুদ্দীন নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্বে থাকাকালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের দায়িত্ব নেন সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ। এর আগে এনএসসি'র দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা তপন চৌধুরী। সেনাপ্রধান দায়িত্বে থাকাকালে ক্রীড়াঙ্গনের আমূল পরিবর্তন সাধিত না হলেও প্রতিটি ক্রীড়া ফেডারেশনের সঙ্গে একটি করে বাণিজ্যিক ব্যাংককে জুড়ে দেয়ার ঘটনাটি সব মহলেই প্রশংসিত হয়েছিল। তাছাড়া তার দায়িত্বকালে প্রায় সব ক'টি ফেডারেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া প্রতিটি ফেডারেশনকে স্বাবলম্বী করে তুলতে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে ক্রীড়াঙ্গনের প্রতি আগ্রহী করতে বড় ভূমিকা পালন করেন। সমপ্রতি প্রতিটি উপজেলায় একটি করে খেলার মাঠ তৈরির ঘোষণাও দিয়েছিলেন সেনাপ্রধান।

No comments:

Post a Comment

Khoj Khobor