April 15, 2009

বাড়ি ছাড়তে এ সপ্তাহেই খালেদাকে নোটিশ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ঢাকা সেনানিবাসের বাড়ি ছেড়ে দিতে চলতি সপ্তাহেই নোটিশ দেবে প্রতিরৰা মন্ত্রণালয়। এরপরও বাড়ি না ছাড়লে তার বিরম্নদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে সরকার। এ নিয়ে রাজপথে আন্দোলন করেও কোন লাভ হবে না বলে আভাস দিয়েছেন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। গতকাল আইন মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে এ সংক্রানত্দ বিষয়ে আইন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট কামরম্নল ইসলাম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. আবদুল আজিজ, এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, আইন সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল, প্রতিরৰা সচিবসহ ঊধর্্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ সব কথা বলেন তিনি। ওদিকে প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও গত বুধবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকের কার্যবিবরণী এখনও জারি করেনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ওই বিভাগের এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠকের কার্যবিবরণী চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যেই জারি হয়ে যায়। তবে এবারের কার্যবিবরণী এখনও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনুমোদন হয়ে ফেরত আসেনি। তাই জারি করা যাচ্ছে না। দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ি নিয়ে সিদ্ধানত্দের ঘরে কি লেখা হবে এনিয়ে দোটানায় রয়েছে সরকার। এজন্য ঊধর্্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন আইনমন্ত্রী। এর আগে গত রোববারও তিনি আইন মন্ত্রণালয়ে ঊধর্্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। গতকাল নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, বাড়ি বরাদ্দ নিয়ে বিএনপি আদালতে গেলে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবে সরকার। বিষয়টি দেখবে প্রতিরৰা মন্ত্রণালয়। বাড়ির বরাদ্দ বাতিল নিয়ে বিএনপি'র রাজপথে আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোন রাজনৈতিক দলের নামে বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়নি। তাদের আন্দোলন করার কথাও না। যার নামে বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তিনি এখনও কোন কথা বলছেন না। তার কথা বলা প্রয়োজন। বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার শফিক বলেন, বৈঠকে খালেদা জিয়ার বাড়ির বরাদ্দ সংক্রানত্দ বিষয়ে এবং তারা আদালতে গেলে সরকারের কি করণীয় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধানত্দ হয়েছে আগামী সপ্তাহে বেগম খালেদা জিয়াকে সময় বেঁধে একটি নোটিশ পাঠানো হবে। নোটিশে তাকে বাড়ি ছাড়তে অনুরোধ করা হবে। এর মাধ্যমে তাকে সরকার সময় দিয়ে সুযোগ দিতে চায়। কিসের ভিত্তিতে নোটিশ দেয়া হবে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, বাড়ি বরাদ্দের আইনগত বৈধতা না থাকায় এ নোটিশ দেয়া হচ্ছে। সেনানিবাসের মতো জায়গায় কারও নামে ৯ বিঘা জমি থাকতে পারে না। সেনানিবাস অ্যাক্ট-১৯২৪ অনুযায়ী সেনা কতর্ৃপৰও কারও কাছে সেনানিবাসের জমি বিক্রি, লিজ, দান করার ৰমতা রাখে না। এছাড়া সরকারও পারে না। তাহলে যারা সেনাবাহিনীর সম্পদ খালেদা জিয়াকে দিয়েছেন তাদের বিরম্নদ্ধে সরকার কোন ব্যবস্থা নেবে কিনা জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, না সরকারের এ ধরনের কোন ইচ্ছা নেই। কারণ সরকারের কোন সংস্থা এ ধরনের ভুল করতেই পারে। তাদের বিরম্নদ্ধে মামলা করলে দেখা যায় সরকারই সব সময় মামলায় হেরে যায়। এছাড়া সেনাবাহিনীর জায়গা সেনাবাহিনীই ব্যবহার করবে। কোন ব্যক্তি তা ব্যবহার করতে পারে না। এর আগে গত বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঢাকা সেনানিবাসের মইনুল রোডের বেগম খালেদা জিয়ার নামে লিজ দেয়া বাড়িটি বাতিলের সিদ্ধানত্দ নেয়া হয়েছে। তবে গত রোববার গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান বলেন, বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার ক্যান্টনমেন্টের বাড়ির ইজারা বরাদ্দ বাতিলের বিষয়টি ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। বাড়িটির ইজারা নিয়ে কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে তাদের আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ইজারা বাতিলের প্রতিবাদ ৪০২ জন শিৰাবিদের

বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সেনানিবাসের বাড়ির ইজারা বাতিলের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ৪০২ জন শিৰাবিদ। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিৰক অধ্যাপক ড. সদরম্নল আমিন স্বাৰরিত এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ প্রতিবাদ জানান। এতে বলা হয়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের প্রচেষ্টা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা মনে করি, জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাতে সরকার যে অনৈতিক সিদ্ধানত্দ নিয়েছে তা প্রত্যাহার করবে। বিবৃতিতে অধ্যাপক ড. আমিনুর রহমান মজুমদার, ড. সিরাজুল ইসলাম, ড. আখতার হোসেন খান, ড. আবদুস সাত্তার, ড. শামসুদ্দীন আহমদ, ড. জাহিদুল ইসলামসহ ৪০২ জনের নাম রয়েছে।

আইনজীবী ফোরামের মানববন্ধন

বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সেনানিবাসের বাড়ির ইজারা বাতিলের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। গতকাল দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান ফটকে এ মানববন্ধন হয়। মানববন্ধনে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, সাইদুর রহমান, গোলাম আরশাদ, গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী আলাল, ফিরোজ শাহ, হেলালউদ্দিন মোলস্না, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সাবেক এমপি ফেরদৌস আক্তার ওয়াহিদাসহ শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

No comments:

Post a Comment

Khoj Khobor