ক্রিকেটে সবচেয়ে সম্মানের জায়গা অধিনায়কের সিংহাসন। নবাব মনসুর আলী খান পাতৌদি সেই সিংহাসনে বসে ছিলেন মাত্র ২১ বছর ৭৭ দিন বয়সে। সাত বছর আগেও এটি ছিল কনিষ্ঠতম অধিনায়কের বিশ্ব রেকর্ড। বর্তমানে অবশ্য রেকর্ডটি জিম্বাবুইয়ান ক্রিকেটার টাটেন্ডা টাইবুর দখলে। তাতে কি? পাতৌদি যেভাবে কম বয়সে দলকে সুসংগঠিত করেছিলেন, আর কেউ কি তা পেরেছে। সড়ক দুর্ঘটনায় ডান চোখ হারানোর পরও যার ক্যারিয়ারে এতটুকু প্রভাব ফেলেনি। তার নেতৃত্বেই ভারত দেশের বাইরে প্রথম টেস্ট জিতেছিল। ১৯৬৮ সালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩-১ সিরিজ জেতে ভারত। একই বছর উইজডেনের বর্ষসেরা ক্রিকেটারও নির্বাচিত হয়েছিলেন পাতৌদি। তার নেতৃত্বেই তো ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন করে উত্থান ঘটেছিল। ১৯৬১ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত ক্যারিয়ারে কখনো হতাশ হননি তিনি। প্রতিটি ম্যাচেই নেতৃত্ব দিয়েছেন শক্ত হাতে। তার দৃঢ়চেতা মনোভাবের জন্যই ক্রিকেটে তিনি 'টাইগার' নামে পরিচিত। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় সবাইকে কাঁদিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটের টাইগার চলে গেলেন না ফেরার দেশে। কম বয়সে এক চোখ হারিয়ে পাতৌদি বুঝতে পেরে ছিলেন চোখের নেই কি মূল্য। যাদের চোখ তাদের কত যন্ত্রণা। তাই কিনা মৃত্যুকালে নিজের চোখটি দান করে গেলেন একটি দাতব্য সংস্থাকে।
নবাব পাতৌদি শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও তার চালচলন ছিল নবাবের মতোই। বাবা ইফতেখার আলী পাতৌদি ছিলেন তার আদর্শ। সিনিয়র পাতৌদি ভারত ও ইংল্যান্ড উভয় দলের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন। ১৯৫২ সালে টাইগার পাতৌদি ১২তম জন্মদিনে বাবা ইফতেখার প্রয়াত হন।
পাতৌদির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে ক্রিকেটাঙ্গনে। টাইগারের প্রয়াণে যেন বর্ণহীন হয়ে গেল ভারতীয় ক্রিকেট। শোকে স্তব্ধ সাবেক ক্রিকেটাররা। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে দারুণভাবে আহত হয়েছেন সুনীল গাভাস্কার। তিনি বলেন, 'এ বড়ই বিষাদজনক সংবাদ। এ তো কয়েক সপ্তাহ আগেও পাতৌদির সঙ্গে ইংল্যান্ডে দেখা হয়েছিল। তাকে তখন আগের মতোই ঝলমলে মনে হয়েছে। আর আজ (পরশু) হঠাৎ তার মৃত্যুর খবর পেলাম।' লিটল মাস্টার শচীন টেন্ডুলকার বলেন, 'টাইগারের অভাব পুরো ক্রিকেট বিশ্বই গভীরভাবে অনুভব করবে। তার মৃত্যুতে ক্রিকেটে যে ক্ষতি হলো তা কোনো দিন পূরণ হওয়ার নয়।'
শোকাভিভূত কলকাতা মহারাজ সৌরভ গাঙ্গুলীও। তিনি বলেন, 'তার আভিজাত্য, ক্রিকেটীয় প্রতিভার জন্য তিনি চিরদিন মানুষের অন্তরে বেঁচে থাকবেন। পাতৌদি ছিলেন অত্যন্ত বিচক্ষণ একজন মানুষ। সব সময়ই তিনি চিন্তা করতেন কীভাবে ভারতীয় ক্রিকেটের মঙ্গল সাধন করা যায়।' ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের নতুন সভাপতি শ্রীনিবাসন বলেছেন, 'পাতৌদি ছিলেন যে কোনো ক্রিকেটারের জন্য রোল মডেল ছিলেন। ব্যাটিং, ফিল্ডিং এবং সুনেতৃত্ব দিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটকে তিনি এক অসীম উচ্চতায় পেঁৗছে দিয়ে গেছেন।' পাতৌদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে সাবেক পাকিস্তান অধিনায়ক ইমরান খান বলেছেন, 'তার মৃত্যুর খবর শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে গেছি। এক চোখে দৃষ্টিশক্তি যদি না হারাতেন, তা হলে ক্রিকেট দুনিয়ার সর্বকালের সেরাদের তালিকায় উজ্জ্বল স্থান করে নিতেন পাতৌদি।'
আসলে মুনসুর আলী খান পাতৌদি ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসের সত্যিকারের মহানায়ক। আর এই মহানায়ককে হারিয়ে শুধু ভারতে নয় শোকের ছায়া নেমেছে বিশ্ব ক্রিকেটেই।
পাতৌদির বর্ণাঢ্য জীবন
জন্ম : ৫ জানুয়ারি ১৯৪১
১৩ ডিসেম্বর ১৯৬১ : নয়াদিলি্লতে টেস্ট অভিষেক ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে
১৯৬১ : ২০ বছর বয়সে সড়ক দুর্ঘটনায় ডান চোখ নষ্ট
২৩ মার্চ ১৯৬২ : ২১ বছর ৭৭ দিন বয়সে অধিনায়ক
ফেব্রুয়ারি ১৯৬৪ : ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অপরাজিত ২০৩ রানের ইনিংস
১৯৬৪ : অর্জুন পুরস্কার
১৯৬৭ : পদ্মশ্রী
ফেব্রুয়ারি-মার্চ ১৯৬৮ : বিদেশে ভারতের প্রথম সিরিজ জয়, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে।
২৭ ডিসেম্বর ১৯৬৯ : শর্মিলা ঠাকুরের সঙ্গে বিয়ে
১৯৭১ : লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী
২৩ জানুয়ারি ১৯৭৫ : মুম্বাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শেষ টেস্ট
১৯৯৩-১৯৯৬ : আইসিসি ম্যাচ রেফারি
অক্টোবর ২০০২ : ভারতীয় ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম প্রেসিডেন্ট
২০০৮ : আইপিএল গভার্নিং কাউন্সিলের সদস্য
মৃত্যু : ২২ সেপ্টেম্বর ২০১১
নবাব পাতৌদি শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও তার চালচলন ছিল নবাবের মতোই। বাবা ইফতেখার আলী পাতৌদি ছিলেন তার আদর্শ। সিনিয়র পাতৌদি ভারত ও ইংল্যান্ড উভয় দলের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন। ১৯৫২ সালে টাইগার পাতৌদি ১২তম জন্মদিনে বাবা ইফতেখার প্রয়াত হন।
পাতৌদির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে ক্রিকেটাঙ্গনে। টাইগারের প্রয়াণে যেন বর্ণহীন হয়ে গেল ভারতীয় ক্রিকেট। শোকে স্তব্ধ সাবেক ক্রিকেটাররা। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে দারুণভাবে আহত হয়েছেন সুনীল গাভাস্কার। তিনি বলেন, 'এ বড়ই বিষাদজনক সংবাদ। এ তো কয়েক সপ্তাহ আগেও পাতৌদির সঙ্গে ইংল্যান্ডে দেখা হয়েছিল। তাকে তখন আগের মতোই ঝলমলে মনে হয়েছে। আর আজ (পরশু) হঠাৎ তার মৃত্যুর খবর পেলাম।' লিটল মাস্টার শচীন টেন্ডুলকার বলেন, 'টাইগারের অভাব পুরো ক্রিকেট বিশ্বই গভীরভাবে অনুভব করবে। তার মৃত্যুতে ক্রিকেটে যে ক্ষতি হলো তা কোনো দিন পূরণ হওয়ার নয়।'
শোকাভিভূত কলকাতা মহারাজ সৌরভ গাঙ্গুলীও। তিনি বলেন, 'তার আভিজাত্য, ক্রিকেটীয় প্রতিভার জন্য তিনি চিরদিন মানুষের অন্তরে বেঁচে থাকবেন। পাতৌদি ছিলেন অত্যন্ত বিচক্ষণ একজন মানুষ। সব সময়ই তিনি চিন্তা করতেন কীভাবে ভারতীয় ক্রিকেটের মঙ্গল সাধন করা যায়।' ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের নতুন সভাপতি শ্রীনিবাসন বলেছেন, 'পাতৌদি ছিলেন যে কোনো ক্রিকেটারের জন্য রোল মডেল ছিলেন। ব্যাটিং, ফিল্ডিং এবং সুনেতৃত্ব দিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটকে তিনি এক অসীম উচ্চতায় পেঁৗছে দিয়ে গেছেন।' পাতৌদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে সাবেক পাকিস্তান অধিনায়ক ইমরান খান বলেছেন, 'তার মৃত্যুর খবর শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে গেছি। এক চোখে দৃষ্টিশক্তি যদি না হারাতেন, তা হলে ক্রিকেট দুনিয়ার সর্বকালের সেরাদের তালিকায় উজ্জ্বল স্থান করে নিতেন পাতৌদি।'
আসলে মুনসুর আলী খান পাতৌদি ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসের সত্যিকারের মহানায়ক। আর এই মহানায়ককে হারিয়ে শুধু ভারতে নয় শোকের ছায়া নেমেছে বিশ্ব ক্রিকেটেই।
পাতৌদির বর্ণাঢ্য জীবন
জন্ম : ৫ জানুয়ারি ১৯৪১
১৩ ডিসেম্বর ১৯৬১ : নয়াদিলি্লতে টেস্ট অভিষেক ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে
১৯৬১ : ২০ বছর বয়সে সড়ক দুর্ঘটনায় ডান চোখ নষ্ট
২৩ মার্চ ১৯৬২ : ২১ বছর ৭৭ দিন বয়সে অধিনায়ক
ফেব্রুয়ারি ১৯৬৪ : ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অপরাজিত ২০৩ রানের ইনিংস
১৯৬৪ : অর্জুন পুরস্কার
১৯৬৭ : পদ্মশ্রী
ফেব্রুয়ারি-মার্চ ১৯৬৮ : বিদেশে ভারতের প্রথম সিরিজ জয়, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে।
২৭ ডিসেম্বর ১৯৬৯ : শর্মিলা ঠাকুরের সঙ্গে বিয়ে
১৯৭১ : লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী
২৩ জানুয়ারি ১৯৭৫ : মুম্বাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শেষ টেস্ট
১৯৯৩-১৯৯৬ : আইসিসি ম্যাচ রেফারি
অক্টোবর ২০০২ : ভারতীয় ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম প্রেসিডেন্ট
২০০৮ : আইপিএল গভার্নিং কাউন্সিলের সদস্য
মৃত্যু : ২২ সেপ্টেম্বর ২০১১
No comments:
Post a Comment