October 13, 2010

চলে গেলেন চ্যালেঞ্জার


জনপ্রিয় টিভি ও চলচ্চিত্র অভিনেতা তোফাজ্জেল হোসেন সাদিক ওরফে অভিনেতা চ্যালেঞ্জার গতকাল ১২ অক্টোবর রাত নয়টা ২০ মিনিটে মারা যান সময়টা নিশ্চিত করেন নাট্যপরিচালক বৃন্দাবন দাস তিনি মৃত্যুর এক ঘণ্টা আগে থেকেই চ্যালেঞ্জারের পাশে বসা ছিলেন মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫১ বছর তিনি দীর্ঘদিন ধরে মস্তিষ্কের ক্যানসারে ভুগছিলেন চ্যালেঞ্জারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে মিডিয়ার সহকর্মীরা তাঁর বাসায় ছুটে যান এঁদের মধ্যে ছিলেন আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সালাউদ্দিন লাভলু, আহসানুল হক মিনু, অরুণা বিশ্বাস, মাহফুজ আহমেদ, মীর সাব্বির, মোহন খান, ফারুক আহমেদ, অরণ্য আনোয়ারসহ আরও অনেকে

চ্যালেঞ্জারের শেষ বিদায়টা হলো একেবারে নীরবে আজ শহীদ মিনারে তাঁর শেষ বিদায়ে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের তারকাদের উপস্থিতি উল্লেখ করার মতো ছিল না এ ব্যাপারে অভিনেত্রী ওয়াহিদা মল্লিক জলি বলেন, ‘এমনটা অবশ্য আশা করিনি শহীদ মিনারে চ্যালেঞ্জার ভাইয়ের বিদায়বেলায় সহকর্মীদের উপস্থিতি যে এতটা কম থাকবে, তা ভাবতে পারিনি দৃশ্যটা দেখে মনটাই খারাপ হয়ে গেল’ নির্মাতা বৃন্দাবন দাস বলেন, এখানে (শহীদ মিনারে) আসার সিদ্ধান্তটা আসলে হঠাত্ নেওয়া হয় অনেকে অবশ্য তাড়াহুড়োর জন্য আসতে পারেননি এখানে চ্যালেঞ্জার ভাইকে রাখাও হয় খুব অল্প কিছু সময়ের জন্য আমেরিকা থেকে বিমানবন্দরে নামামাত্রই ফোনে খোঁজ নেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী তাড়াহুড়োর কারণে তিনিও শেষ দেখা দেখতে পারেননি

শহীদ মিনারে চ্যালেঞ্জারের লাশ আনা হয় আজ বেলা পৌনে ১১টায় তাঁকে সেখানে শেষবারের মতো দেখতে যান পীযুষ বন্ধ্যোপাধ্যায়, তুষার খান, হাসান ইমাম, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, উত্তম গুহ, চিত্রলেখা গুহ, শাহনাজ খুশি, আহসান হাবীব নাসিম, ডা. এজাজুল ইসলাম, মানিক মানবিক, শামীম জামান ও টেলিহোমের আলী বশীর চ্যালেঞ্জারের ছোট বোন অভিনেত্রী মুনিরা মিঠু বলেন, হুমায়ূন আহমেদ স্যার ও শাওন প্রতিনিয়ত ফোনে খোঁজ-খবর নিয়েছেন শহীদ মিনারে এক ঘণ্টা রেখে জানাজা শেষে লাশ নানির বাড়ি ধামরাইয়ের পাইকপাড়ায় পাঠানো হয় সেখানে বাদ আসর জানাজা শেষে মায়ের কবরের পাশে তাঁর লাশ সমাহিত করা হয়

টিভিতে চ্যালেঞ্জারের আগমন ঘটে নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ‘হাবলঙ্গের বাজার’ নাটকের মধ্য দিয়ে আর হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে চ্যালেঞ্জারের পরিচয় হয় অন্যদিনের সম্পাদক মাজহারুল ইসলামের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জার অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হলো রাঙা বাবুর বিয়ে, গরুচোর, উড়ে যায় বকপক্ষী, জুতা বাবা, বৃক্ষমানব, শওকত সাহেবের গাড়ি কেনা, যমুনার জল দেখতে কালো, চন্দ্রকারিগর, গনি সাহেবের শেষ কিছুদিন, কালা কইতর, সাদেক দফাদার, ওয়ারেন ইত্যাদি অভিনীত চলচ্চিত্রের মধ্যে হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্যামল ছায়া’, শহীদুল ইসলাম খোকনের ‘লাল সবুজ’ এবং আমজাদ হোসেনের ‘কাল সকালে’ উল্লেখযোগ্য

চ্যালেঞ্জার ১৯৫৯ সালে ঢাকার খিলগাঁওয়ের হাজীপাড়ায় জম্মগ্রহণ করেন তিনি খিলগাঁও মডেল স্কুল থেকে এসএসসি এবং নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন এরপর ১৯৭৮ সালে জীবিকার সন্ধানে পাড়ি জমান সৌদি আরবে আট বছর সেখানে থাকার পর ১৯৮৬ সালে দেশে ফেরেন এসেই জড়িয়ে পড়েন প্রিন্টিং ব্যবসার সঙ্গে

তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনিই ছিলেন সবার বড় তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে ও বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন

No comments:

Post a Comment

Khoj Khobor