গার্মেন্ট শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যেই দুপুরে রাস্তার ওপর আহাজারি করছিলেন গার্মেন্টকর্মী রোকসানা বেগম। সবার কাছে তার একটাই আকুতি 'আমার স্বামী কোথায় - তাকে এনে দাও'। পরিচয় দিয়ে কথা বলতেই রোকসানা জানান, 'আমাকে নিতে এসেছিল ও। এখন ওকে খুঁজে পাচ্ছি না। সবাই বলছে পুলিশের গুলিতে নাকি ও মারা গেছে।' রোকসানার দুপুরের আহাজারি সত্যি হলো রাতে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যাওয়া হয় পুলিশের গুলিতে নিহত রোকসানার স্বামী বাবলু শেখের লাশ। কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে বাবলু শেখসহ দু'জনের লাশ মর্গে নিয়ে যায় পুলিশ। লাশ নিয়ে যাওয়ার পর মর্গ এলাকায় সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।রোকসানা নিপ্পন গার্মেন্টের শ্রমিক। তার স্বামী বাবলু শেখ চালাতেন ভ্যান। দু'জনের ছোট্ট সংসার ভালোভাবেই চলছিল। থাকতেন বাস্তুহারা পল্লীতে। হঠাৎ আসা ঝড়ে ভেঙে গেছে রোকসানার সংসার। স্বামীকে হারিয়ে নির্বাক রোকসানা। দুপুরে কথা বলার সময় রোকসানা বারবার বলছিলেন, 'সবার কথা যেন মিথ্যা হয়। আমি যেন সুস্থভাবে ওকে ফিরে পাই। ওর তো কোনো দোষ নেই। ও তো মারামারি করতে আসেনি। তাহলে পুলিশ ওকে কেন গুলি করল?' সাংবাদিকরা যখন রোকসানাকে আশ্বস্ত করছেন এই সংঘর্ষে কেউ মারা যায়নি - তখনও রোকসানার চোখে-মুখে ছিল আতঙ্ক। রাতে যখন বাবলু শেখের লাশের কথা পুলিশ নিশ্চিত করেছে, তখন রোকসানা বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। প্রতিবেশীদের কোনো সান্ত্বনাই তার কষ্ট ভোলাতে পারেনি। জ্ঞান ফিরে এলে রোকসানা বিড় বিড় করে বলছেন, 'আমার স্বামীকে এনে দাও।' কেউ আর কোনোদিন তার স্বামীকে ফিরিয়ে দিতে পারবে না। একটি বুলেট রোকসানার জীবন তছনছ করে দিল।
November 1, 2009
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment