September 6, 2009

সাইফুর রহমান আর নেই - মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত

বাংলাদেশের রাজনীতি অঙ্গনের বর্ষীয়ান নেতা সাবেক অর্থমন্ত্রী ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য এম সাইফুর রহমান আর নেই। গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহে .... রাজিউন)।

তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে আসে। সাইফুর রহমানের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। সাইফুর রহমানের মৃত্যুর কারণে বেগম জিয়া গতকাল তার সব কর্মসূচি স্থগিত করেন।সাইফুর রহমানের বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় তার মরদেহ নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে আনা হবে এবং সেখানে অনুষ্ঠিত হবে প্রথম জানাজা। এরপর বেলা আড়াইটায় দ্বিতীয় দফা জানাজা হবে সংসদ প্লাজায়। এরপর গুলশানের আজাদ মসজিদে বাদ আসর তৃতীয় জানাজা শেষে তার মরদেহ মৌলভীবাজারের উদ্দেশে নেয়া হবে। আগামীকাল সোমবার পারিবারিক কবরস্থানে স্ত্রীর কবরের পাশে সাইফুর রহমানের মরদেহ দাফন করা হবে।

সাইফুর রহমান তার নির্বাচনী এলাকা মৌলভীবাজার থেকে ঢাকায় ফেরার পথে গতকাল দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের খড়িয়ালা নামক স্থানে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। সাইফুর রহমানের গাড়িটি বেলা আড়াইটার দিকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের খাদে পড়ে যায়। এতে সাইফুর রহমান গুরুতর আহত হন। সংবাদ পেয়ে র‌্যাব-৯-এর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সাইফুর রহমান ও অপর ৪ জনকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইফুর রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানান, দুর্ঘটনায় সাইফুর রহমানের সঙ্গে থাকা শামছুল হক (৪০), সজীব মিয়া (২৫), শরীফ আহমেদ (২৬) ও সিরাজুল ইসলাম (২৮) আহত হন। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সাইফুর রহমানের মৃত্যুর খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ভিড় জমান। স্থানীয় বিএনপির নেতারা ছাড়াও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ অন্য রাজনৈতিক দলের নেতারাও হাসপাতালে ছুটে যান। ভিড় সামলাতে হাসপাতালে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে হয়।

বিকেল ৫টায় সাইফুর রহমানের ছেলে কাউছার রহমানসহ নেতাকর্মীরা এম্বুলেন্সে করে লাশ ঢাকায় নিয়ে আসেন। রাত পৌনে ৮টায় সাইফুর রহমানের লাশ তার গুলশানের বাসভবন জালালাবাদ হাউজে আনার পর শোকবিহ্বল পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সাইফুর রহমানের পরিবারের সদস্য ছাড়াও তার রাজনৈতিক শুভানুধ্যায়ীরা একে একে তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান। রাত পৌনে ৯টায় বেগম খালেদা জিয়া যান জালালাবাদ হাউজে। খালেদা জিয়া সেখানে পেঁৗছালে এক বেদনাবিধুর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তিনি বাসার ভেতরে রাখা সাইফুর রহমানের কফিনের সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে নীরবে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে মরহুমের মেজ ও ছোট ছেলেমেয়েদের সাত্ত্বনা দেন। এ সময় বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, সাবেক স্পিকার জমিরউদ্দিন সরকার, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, এম শামসুল ইসলাম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আ স ম হান্নান শাহ, সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফসহ দলের কেন্দ্রীয়, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদও সেখানে যান।

এর আগে সাইফুর রহমানের বাসায় যান স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু। তারা মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।

আজকের কর্মসূচি : সাইফুর রহমানের প্রথম জানাজা হবে দুপুর সাড়ে ১২টায় নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এবং এরপর বেলা আড়াইটায় দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে সংসদ প্লাজায়। বাদ আসর তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে গুলশানের আজাদ মসজিদে, এরপর সাইফুর রহমানের মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজার নিয়ে যাওয়া হবে।

বর্ণাঢ্য জীবন

বাংলাদেশের রাজনীতি অঙ্গনের বর্ষীয়ান নেতা সাবেক অর্থমন্ত্রী ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য এম সাইফুর রহমান বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। অর্থমন্ত্রী হিসেবে তিনি জাতীয় সংসদে মোট ১২ বার বাজেট পেশ করেন।

তার জন্ম ১৯৩২ সালের মার্চে মৌলভীবাজার সদরের বাহারমর্দন গ্রামে। ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি নেন তিনি। এরপর লন্ডনে চার্টার্ড একাউন্টেন্সির ওপর উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন।

পেশায় চার্টার্ড একাউন্ট্যান্ট সাইফুর রহমান বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাত ধরে রাজনীতিতে যুক্ত হন। জিয়ার মন্ত্র্রিসভায় প্রথমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং পরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন সাইফুর রহমান। এরপর বিএনপি যতদিন ক্ষমতায় ছিল, সাইফুর রহমানই অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি চারবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিগত সংসদ নির্বাচনেও সিলেট-১ ও মৌলভীবাজার-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সময় তিনি দেশে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) চালু করেন।

এম সাইফুর রহমান ১৯৭৬-৮২, ১৯৯১-৯৬ ও ২০০১-২০০৬ সালে সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিভিন্ন সময় অর্থ, পরিকল্পনা, বাণিজ্য ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কমিটির সভাপতি হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রাখেন।

সাইফুর রহমান আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্বব্যাংকের বোর্ড অফ গভর্নেন্সের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৯৪ সালে অক্টোবরে মাদ্রিদে অনুষ্ঠিত আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সম্মেলনে তিনি সভাপতিত্ব করেন।

১৯৮০-৮২, ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে সাইফুর রহমান বিশ্বব্যাংক, এডিবি, আইএমএফডিতে বাংলাদেশের গভর্নর ছিলেন। এছাড়া ইইসি, এসকাপ, কমনওয়েলথ, বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের অর্থ ও বাণিজ্য বিষয়ক প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন তিনি।

১৯৯৫ সালে কলম্বিয়ায় অনুষ্ঠিত জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। এছাড়া এই একই বছরে বসনিয়ায় অনুষ্ঠিত ওআইসি সম্মেলনেও তিনি বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান ছিলেন।

১৯৫৮ সালে লন্ডন থেকে চার্টার্ড একাউন্ট্যান্সিতে ডিগ্রি লাভ এবং ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্যে এডভান্সড ম্যানেজমেন্টে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন তিনি।

ছাত্রজীবনে বিভিন্ন প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল ও আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ঢাকা মুসলিম হলের সভাপতি থাকাকালে ১৯৫২ সালের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন ও কারাবরণ করেন।

১৯৭৪ সালে বুখারেস্টে অনুষ্ঠিত বিশ্বস্বাস্থ্য সম্মেলনে জাতিসংঘ সমিতির বিশ্ব ফেডারেশন প্রতিনিধিদলের সদস্য ছিলেন।

১৯৭৭-'৭৮ সালে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে তিনি যোগদান করেন।

১৯৭৮ সালে জেনেভায় অনুষ্ঠিত আঙ্কটাড সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। ১৯৭৮ সালে প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

তিনি ঢাকা-উত্তর রোটারি ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

সদস্য ছিলেন অধুনালুপ্ত জাগদলের, বিশেষ করে সিলেটে পার্টি সংগঠনে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন তিনি। বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সাইফুর রহমান ১৯৭৬ সালে প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য নিযুক্ত হন। ১৯৭৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী নিযুক্ত হন।

সাইফুর রহমানের বড় ছেলে নাসের রহমানও সাবেক সাংসদ। নাসের ছাড়াও সাইফুর রহমানের আরও দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ১/১১ প্রেক্ষাপটে সাইফুর রহমান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ওপর অনাস্থা প্রকাশ করে সংস্কার প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দেন। ২০০৭ সালের ২৯ অক্টোবর নিজ বাসভবনে দলের গঠনতন্ত্র অমান্য করে স্থায়ী কমিটির সভার মাধ্যমে নিজেই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন হন। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর খালেদা জিয়ার কাছে দুঃখ প্রকাশ করে তার নেতৃত্বের ওপর আস্থা প্রকাশ করেন তিনি। বয়স ও শারীরিক অবস্থার কারণে সম্প্রতি রাজনীতি থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সাইফুর রহমান; কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে তার অবসরের সিদ্ধান্তকে অনুমোদন করা হয়নি।

জাতীয় নেতৃবৃন্দের শোক প্রকাশ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক অর্থমন্ত্রী বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এম সাইফুর রহমানের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া ও অর্থমন্ত্রী এমএ মুহিতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। গতকাল পৃথক শোকবার্তায় মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন তারা।

গতকাল এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান বলেন, সাইফুর রহমানের মৃত্যুতে দেশ একজন প্রবীণ রাজনীতিককে হারাল। শোকবার্তায় তিনি মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে পরিবারের সদস্যদের প্রতি সহানুভূতি জ্ঞাপন করেন।

বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া শোকবার্তায় বলেন, এম সাইফুর রহমানের দূরদর্শী চিন্তা ও পরিকল্পনা এ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করেছে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও তার অবদান অপরিসীম। তার মৃত্যুতে জাতীয় অর্থনীতি এবং রাজনীতির ক্ষেত্রে যে শূন্যতা সৃষ্টি হলো তা পূরণ হওয়ার নয়। সাইফুর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

সড়ক দুর্ঘটনায় সাবেক অর্থমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা এম সাইফুর রহমানের আকস্মিক মৃত্যুতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এক শোকবার্তায় সাইফুর রহমানকে বিএনপির একজন ত্যাগী নেতা হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, সাইফুর রহমানের মৃত্যুতে জাতি একজন দেশপ্রেমিক নেতাকে হারাল এবং এটা জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখায় জাতি তাকে স্মরণ করবে। মন্ত্রী শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান এবং রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।

সাইফুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে জাতীয় সংসদের স্পিকার এডভোকেট আবদুল হামিদ ও ডেপুটি স্পিকার লে. কর্নেল (অব.) শওকত আলী শোক প্রকাশ করেছেন। স্পিকার আবদুল হামিদ এক শোকবার্তায় বলেন, তার মৃত্যুতে দেশ এক বরেণ্য নেতাকে হারাল। তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও দেশের উন্নয়নে সাইফুর রহমানের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী সাইফুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোকবার্তায় তিনি মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ অন্য এক শোকবার্তায় সাইফুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবুল কাশেম এক যৌথ বিবৃতিতে সাইফুর রহমানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। বিবৃতিতে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন তারা ।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি ও সাধারণ সম্পাদক বিমল বিশ্বাস সাবেক অর্থমন্ত্রীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

এছাড়াও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, বিএনপি মহাসচিব এডভোকেট খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) চেয়ারম্যান ড. ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী, ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি মোহাম্মদ অফজাল ও সাধারণ সম্পাদক নুরুর রহমান সেলিম, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের নেত্রী এডভোকেট তারানা হালিমসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা পৃথক শোক বার্তায় সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

মৌলভীবাজারে তিন দিনের শোক

সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের মৃত্যুতে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি গতকাল শনিবার থেকে সংগঠনের পক্ষ থেকে ৩ দিনব্যাপী শোক পালন ও কালোব্যাজ ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ অঞ্চল হারালো সবচেয়ে সক্ষম এক নেতাকে: মনমোহন সিং
সাবেক অর্থমন্ত্রী ও বিএনপির প্রবীণ নেতা সাইফুর রহমানের মর্মান্তিক মৃতু্যতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং। গতকাল প্রয়াত সাইফুর রহমানের পুত্র নাসের রহমানকে পাঠানো এক শোকবার্তায় তিনি শোকাহত পরিবার পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানান। তিনি বলেন, সাইফুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের নামী রাজনীতিবিদদের একজন। তিনি অর্থনীতির ক্ষেত্রে শুধু সফল ছিলেন না, একজন প্রজ্ঞাবান দেশনেতাও ছিলেন। মনমোহন সিং আরও বলেন, সাইফুর রহমান বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আধুনিকতার পথে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এদেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে তার সংস্কার বহুদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় পথ দেখিয়েছে। কারণ ৯০ দশকের শুরুতে তিনিই ছিলেন দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রবর্তক। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার মৃতু্যতে বাংলাদেশ একজন সৎ দেশপ্রেমিককে হারালো। তিনি ছিলেন একজন নিঃস্বার্থ দূরদর্শী নেতা। তিনি আরও বলেন, আমরা দু'জনেই দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও সমৃদ্ধিতে অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাস করতাম। আমি তার পরামর্শকে সবসময়েই বিশেষ করে মূল্যায়ন করি। তার মৃতু্যতে আমি এক পুরনো বন্ধুকে হারালাম আর এ অঞ্চল হারালো তার সবচেয়ে সক্ষম এক নেতাকে। মনমোহন সিং শোকবার্তায় সর্বশক্তিমানের কাছে তার বন্ধুর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।

No comments:

Post a Comment

Khoj Khobor