August 31, 2009

ইমামের বক্তব্য অরুচিকর সংসদীয় শিষ্টাচারবহির্ভূত : সুরঞ্জিত


আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের বক্তব্য অসাংবিধানিক, অশোভনীয়, অবান্তর, অপ্রাসঙ্গিক, অরুচিকর ও সংসদীয় শিষ্টাচারবহির্ভূত। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ৩ জনকেই ডাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, প্রথমে আইন সচিব এবং পর্যায়ক্রমে সংস্থাপন সচিব ও উপদেষ্টা এইচ টি ইমামকে ডাকা হবে।

গতকাল সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, উপদেষ্টাকে যিনি (প্রধানমন্ত্রী) নিয়োগ দিয়েছেন তিনিই আমাকে সংসদীয় কমিটির সভাপতি পদে নিয়োগ দিয়েছেন। সংবিধান ও কার্যপ্রণালি বিধি অনুযায়ী সরকারে প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে কমিটিকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চান। তিনি বলেন, কোন প্রতিহিংসা নিয়ে এ সংসদীয় স্থায়ী কমিটি কাজ করছে না, সংবিধান অনুযায়ী সবার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই কাজ করা হচ্ছে। কমিটিতে ডাকার পর এইচ টি ইমাম কেন এত আতঙ্কিত ও স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছেন তা বোধগম্য নয়।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আমি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছি আর সংসদ নেতা আমাকে সংসদীয় কমিটির সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন। আইন অনুযায়ী বিশ্বস্ততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার জন্য আমি কাজ করছি। রাষ্ট্রীয় এই কাজে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তিনি বলেন, সংবিধান ও কার্যপ্রণালি বিধি অনুযায়ী সংসদীয় কমিটির কাজ সরকার ও প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। তাই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার স্বার্থে দুই বিচারককে অপসারণের ঘটনায় ৩ জনকে ডাকার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সাংবাদিকদের একটি অডিও ক্যাসেট দেখিয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, কমিটির বৈঠকের রেকর্ড রয়েছে, যা শুনিয়ে আমি কাউকে বিব্রত করতে চাই না। তবে যে কেউ চাইলে স্পিকারের কাছ থেকে এই রেকর্ড দেখে নিতে পারেন। তিনি বলেন, আগামী ৯ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে আইন সচিবকে ডাকা হবে। এরপর তার বক্তব্যে কমিটি খুশি না হলে সংস্থাপন সচিবকে ডাকা হবে। এরপরও প্রকৃত ঘটনা জানা সম্ভব না হলে উপদেষ্টা এইচ টি ইমামকে ডাকা হবে।

মীমাংসিত ইস্যু নিয়ে কেন বিতর্ক করা হচ্ছে- এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও সময়োচিত কার্যকর পদক্ষেপের কারণে দেশ একটি অনিবার্য সংঘাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। কারণ দুই বিচারককে অব্যাহতি দেয়ার ঘটনায় আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে সংঘাতের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। এজন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইন প্রতিমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছি; কিন্তু তারপরও এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য ওই ঘটনা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, প্রথম আদেশটি ভুল ছিল বলেই দ্বিতীয় আদেশ দেয়া হয়েছে। আর এই আদেশের মধ্যে আমরা এইচ টি ইমামের সই দেখেছি। আর এই ফাইলটি উপর থেকে নিচে এসেছে, যেটা ব্যতিক্রম। সে কারণেই এই উদ্যোগ। তিনি বলেন, আমরা ৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করিনি। তাদের কাছ থেকে প্রকৃত ঘটনা জানতে চেয়েছি। এক্ষেত্রে হিংসা ও বিদ্বেষ খোঁজার কোন সুযোগ নেই। তাই আমার শ্রদ্ধেয় বন্ধু এইচ টি ইমাম এর মধ্যে যে উস্কানি খুঁজেছেন তা সঠিক নয়।

বঞ্চিত হওয়ার কারণে এ পদক্ষেপ নেয়ার অভিযোগ অবান্তর দাবি করে তিনি বলেন, আপনি দায়িত্ব নেবেন, আর দায়িত্বশীল হবেন না- এটা ঠিক নয়। আমরা চ্যালেঞ্জ করতে চাই না। তবে তলব শব্দটি আমরা ব্যবহার করিনি। আমরা ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এইচ টি ইমাম সাহেব আমার শ্রদ্ধেয় বন্ধু। তার কাছ থেকে আমরা ঘটনাটি জানতে চাই। এর মাধ্যমে শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে- এমন আশঙ্কার কোন সুযোগ নেই। কারণ প্রধানমন্ত্রী চান সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, সংসদীয় কমিটি কার্যকর হলে প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। আর প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হলে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। এর মাধ্যমে জোট, মহাজোট ও জাতির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে বলে তিনি দাবি করেন।

No comments:

Post a Comment

Khoj Khobor