সৌদি বাদশাহর সঙ্গে বৈঠক
জনশক্তি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের
আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে আরও জনশক্তি নিতে সৌদি বাদশাহ আবদুলস্নাহ বিন আবদুল আজিজকে অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি একইসঙ্গে বাংলাদেশের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারেরও আহ্বান জানান। সৌদি সফরের প্রথম দিনে গত রাতে ওই দেশের রাজধানী রিয়াদে দ্বিপৰীয় বৈঠককালে তিনি এ আহ্বান জানান। বৈঠকে জনশক্তি খাত ছাড়াও দু'দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে বিনিয়োগসহ দ্বিপৰীয় স্বার্থসংশিস্নষ্ট সকল বিষয়ে আলোচনা হয়। মুসলমানদের দুই পবিত্র মসজিদের সংরৰক সৌদি বাদশাহ'র সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর এ বৈঠকে সফরসঙ্গী মন্ত্রীরাও উপস্থিত ছিলেন। গত রাতে রিয়াদে বাদশাহ'র আল হামাম প্রাসাদের রাজকীয় দরবার হলে এ বৈঠক হয়। মুসলিম উম্মাহর অভিভাবক হিসেবে পরিচিত সৌদি বাদশাহ'র আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সৌদি আরব রয়েছেন। দ্বিপৰীয় ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশী শ্রমিকদের দুর্দশাসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এর আগে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স সৌদ আল ফয়সাল বিন আবদুল আজিজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কনফারেন্স প্যালেসে সাৰাৎ করেন। বৈঠকে জনশক্তি রপ্তানিসহ বিভিন্ন দ্বিপৰীয় বিষয় আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সৌদি আরবে বাংলাদেশী শ্রমিকদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে তার উদ্বেগের কথা জানান এবং উদ্বেগ কাটাতে সৌদি সরকারের সহায়তা কামনা করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপুমনি, প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ও সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী উভয়ে ভবিষ্যতে দু'দেশের চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। একই স্থানে সৌদি আরবের শ্রমমন্ত্রী ড. আবদুল ওয়াহেদ বিন আল হুমাইদীর সঙ্গে শ্রম ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বৈঠক করেন। গতকাল সকালে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রিয়াদ পেঁৗছান। রিয়াদের বাদশাহ খালেদ আনত্দর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান শূরা কাউন্সিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ড. সৌদ বিন সায়ীদ আল মা'তামি। এসময় সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ফজলুল করিম ও বাংলাদেশে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ড. আবদুলস্নাহ বিন নাসের আল বুসাইরি উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে তাকে কনফারেন্স প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার মধ্যরাতে বাংলাদেশ বিমানের ঢাকা-রিয়াদ ফ্লাইটে রিয়াদের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যান। এটি তার প্রথম বিদেশ সফর। তার সফরসঙ্গী হিসেবে বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ৪২ সদস্যের দলে রয়েছেন সরকারের চার মন্ত্রী- পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপুমনি, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান। প্রধানমন্ত্রীকে জিয়া আনত্দর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদায় জানাতে মন্ত্রিসভার সদস্যরা ছাড়াও সরকারের ঊধর্্বতন কর্মকর্তারা, তিন বাহিনী প্রধান ও ঢাকার কূটনৈতিক কোরের ডীন সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত ডোরা র্যাপোল্ড উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে গত রাতেই রিয়াদ থেকে মক্কা নগরীর উদ্দেশে রওনা হবেন বলে জানা গেছে। রাতেই তার ওমরাহ হজ করার কথা রয়েছে। এ সময় তার বোন শেখ রেহানা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ অন্য সফরসঙ্গীরাও হজ আদায় করবেন। আজ তিনি পবিত্র নগরী মদিনা যাবেন এবং মহানবী (সা.)-এর রওজা মোবারক জিয়ারত করবেন এবং নামাজ আদায় করবেন। ২৪শে এপ্রিল রাতে বাংলাদেশ বিমানের জেদ্দা-ঢাকা ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করবেন বলে জানা গেছে। ২৫শে এপ্রিল তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
No comments:
Post a Comment